


ভাসানী পরিষদ
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঘোষিত ‘সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা’-কে সামনে রেখে তাঁর জীবনাদর্শ চর্চা ও স্বপ্নকে লালন করে জাতীয় স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে…….



‘সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা’-কে সামনে রেখে ‘ভাসানী পরিষদ’ গঠিত হয়েছে।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঘোষিত ‘সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা’-কে সামনে রেখে তাঁর জীবনাদর্শ চর্চা ও স্বপ্নকে লালন করে জাতীয় স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশ, নৈতিক মূল্যবোধের অনুশীলন, স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের আকাঙ্খা বাস্তবায়ন, প্রাণ-প্রকৃতি-পালনবাদী উন্নয়ন, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণহীন বাংলাদেশ গঠন এবং সমকালীন সমাজ কাঠামোর প্রগতিশীল পরিবর্তনের সাথে নিজেদেরকে খাপ খাওয়ানোর মানসে ‘ভাসানী পরিষদ’ গঠিত হয়েছে।
ভাসানী পরিষদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যঃ
একনজরে মওলানা ভাসানী

মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ১৮৮০ সালের ১২ ডিসেম্বর তৎকালীন পাবনা (বর্তমান সিরাজগঞ্জ) জেলার সয়াধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম হাজী শরাফত আলী খান এবং মাতার নাম মজিরন নেসা বিবি। তিন ভাই ও এক বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার ছোট। শৈশবে তাঁর ডাক নাম ছিল ‘চেগা মিয়া’।
শৈশবেই পিতৃ-মাতৃহীন হন মওলানা ভাসানী। কিছুদিন তিনি চাচা ইব্রাহিম খানের আশ্রয়ে থাকেন।
পরে পিতার পরিচিত সুফি সাধক নাসিরুদ্দীন বোগদাদী (রহঃ)-এর সান্নিধ্যে আসেন।
১৮৯৭ সালে নাসিরুদ্দীন বোগদাদীর সহযোগিতায় তিনি প্রথম আসাম গমন করেন। তাঁর কাছে ভাসানী কোরআন, হাদিস, ফিকাহ, দর্শন, তর্কশাস্ত্র, রসায়ন, জ্যোতির্বিজ্ঞান, ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসাবিদ্যা এবং আধ্যাত্মিক শিক্ষা লাভ করেন। পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁকে ভারতের দেওবন্দের দারুল উলুমে পাঠানো হয়। ১৯০৭ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত দেওবন্দে অধ্যয়নকালে তিনি সাম্রাজ্যবাদবিরোধী রাজনৈতিক দর্শনে অনুপ্রাণিত হন এবং রবুবিয়াতের দীক্ষা গ্রহণ করেন।

১৯২৪ সালে মওলানা ভাসানী আসামের ভাসানচরে এক বিরাট কৃষক সম্মেলন অনুষ্ঠান করেন এবং সেখান থেকেই ‘ভাসানী’ উপাধি লাভ করেন।
১৯৩০ সালে তিনি মুসলিম লীগে যোগদান করেন। ১৯৩২ সালের ডিসেম্বর মাসে সিরাজগঞ্জের কাওয়াখোলা ময়দানে তিন দিনব্যাপী ‘বঙ্গ আসাম প্রজা সম্মেলন’ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তিনি একজন দুর্বিনীত কৃষক নেতা হিসেবে আবির্ভিুত হন।
১৯৪৭ সালের ৬-৭ জুলাই সিলেটের জনগণকে পাকিস্তানের পক্ষে গণভোট দিতে ব্যাপক তৎপরতা চালান। যার ফলশ্রুতিতে বৃহত্তর সিলেট এখন বাংলাদেশের অংশ। ১৪ আগস্ট পাকিস্তান যেদিন স্বাধীনতা লাভ করে তিনি সেদিন আসামের কারাগারে। ১৯৪৭ সালের শেষ দিকে তাঁকে এ শর্তে মুক্তি দেয়া হয় যে, তিনি আসাম ছেড়ে চলে যাবেন। নভেম্বরে আসামের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি পূর্ব পাকিস্তানে প্রত্যাবর্তন করেন।
১৯৫২ সালের ৩১ জানুয়ারি মওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে ঢাকা বার লাইব্রেরি হলের বৈঠকে ‘সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’ গঠিত হয়। ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় শহীদানের ঘটনায় ২২ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গায়েবানা জানজায় ইমামতি করেন এবং ভাষা আন্দোলনে জড়িত থাকার কারণে গ্রেফতার বরণ করেন।১৯৫৪ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হক-ভাসানী-সোহরাওয়ার্দীর নেতৃত্বে যুক্তফ্রন্ট গড়ে ওঠে এবং নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট ব্যাপক বিজয় লাভ করে।

১৯৭১ সালের ৯ জানুয়ারি মওলানা ভাসানী সন্তোষে ‘স্বাধীন পূর্ব পাকিস্তান’ বিষয়ক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠান করেন এবং ১০ জানুয়ারি পল্টনের জনসভায় ভাষণ দান করেন। ৯ মার্চ পল্টনের ঐতিহাসিক জনসভায় তিনি ‘স্বাধীন সার্বভৌম পূর্ব বাংলা’ প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক আন্দোলনের ডাক দেন। ২১ মার্চ চট্টগ্রামের লালদিঘি ময়দানে স্বাধীনতার স্বপক্ষে জনসভায় ভাষণ দান করেন।
১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি মওলানা ভাসানী ভারত থেকে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। ২৬ ফেব্রুয়ারি সন্তোষে রাজনৈতিক সমাবেশ ডাকেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি আলোড়ন সৃষ্টিকারী সাপ্তাহিক হক-কথা প্রকাশ করেন।
৯ এপ্রিল ঢাকার পল্টন ময়দানে স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনসভা করেন।

১৯৭৬ সালের ১৬ মে মওলানা ভাসানী ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে ঐতিহাসিক ফারাক্কা লং মার্চে নেতৃত্ব দেন। একই বছর ১৩ নভেম্বর সন্তোষে ‘খোদা-ই-খেদমতগার’ সম্মেলনে জীবনের সর্বশেষ ভাষণ দান করেন। ১৭ নভেম্বর রাত ৮.২০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৯ নম্বর কেবিনে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ঘোষিত ‘সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা’-কে সামনে রেখে তাঁর জীবনাদর্শ চর্চা ও স্বপ্নকে লালন করে জাতীয় স্বার্থে বিভিন্ন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ মতামত প্রকাশ, নৈতিক মূল্যবোধের অনুশীলন, স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের আকাঙ্খা বাস্তবায়ন, প্রাণ-প্রকৃতি-পালনবাদী উন্নয়ন, অসাম্প্রদায়িক ও শোষণহীন বাংলাদেশ গঠন এবং সমকালীন সমাজ কাঠামোর প্রগতিশীল পরিবর্তনের সাথে নিজেদেরকে খাপ খাওয়ানোর মানসে ‘ভাসানী পরিষদ’ গঠিত হয়েছে।

ভাসানী পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্যবৃন্দ